ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় বন্যা শুরু হয়। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত উপজেলার হাওড়া নদীর পানি আরও ৪ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বর্তমানে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ১২ ঘণ্টায় আখাউড়ার হাওড়া নদীর পানি আরও ৪ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বর্তমানে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে বন্যার পানিতে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এখনও বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বন্যায় আখাউড়ার মোট ৪৭টি গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ, ১৪ কিলোমিটার রাস্তা, ১০টি সেতু পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি কমতে শুরু করাই ১১টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ৪টি কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষিজমি ও মৎস্য খামারের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে গত ২১ আগস্ট আখাউড়ায় বন্যা শুরু হয়। এতে উপজেলার বঙ্গেরচর, কালিকাপুর, বাউতলা, আইড়ল ও খলাপাড়াসহ ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়।
পরদিন ২২ আগস্ট বন্যার পানি বেড়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। পরবর্তীতে পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা পানির বেগ কমায় এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যার পানি কমতে থাকে। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ বাসা-বাড়ি থেকে পানি সরে গেছে।
তবে বন্যার কারণে আড়িয়ল ও খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর দুইটি বাঁধসহ অন্তত ৮টি স্থানে সড়ক ধসে পড়েছে। এতে করে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে পানি সরে গেলেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখনও বন্ধ রয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। পাশাপাশি আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়েও যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর আহমেদ বলেন, হাওড়া নদীর পানির সমতল হ্রাস পাওয়া অব্যাহত রয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনািবার সকাল ৬টা পর্যন্ত আরও ৪ সেমি কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে হাওড়া নদীর গঙ্গাসাগড় পয়েন্টে পানির সমতল রয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ মিটার। ফলে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। বাসা-বাড়ি থেকে পানি সরে যাচ্ছে। দ্রুত ভেঙে যাওয়া বাঁধ ও সড়ক মেরামত করে যান চলাচল ও স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম, যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক করা হবে।
টিএইচ